sanatansangbed

Introduction of SANATAN dharma scriptures

আচার্য শঙ্কর প্রণােদিত গীতার সম্বন্ধভাষ্য-১৪

এরপরে বলছেন ভগবান কে, আর তিনি কেন আসেন,
স চ ভগবান জ্ঞানৈশ্বর্যশক্তিবলবীর্যতেজোভিঃ সদা সম্পন্নস্ত্রিগুণাত্মিকাং বৈষ্ণবীং স্বাং মায়াং মূল প্রকৃতিং বশীকৃত্য, অজোহব্যইয়ো ভূতানাং ঈশ্বরো নিত্যশুদ্ধমুক্তস্বভাবোহপি সন্, স্বমায়য়া দেহবানিব জাত ইত চ লোকনুগ্রহং কুর্বন্ লক্ষ্যতে। অপ্রয়োজনাভাবেহপি ভূতানুজিঘৃক্ষয়া বৈদিকং হি ধর্মদ্বয়ং অর্জুনায় শোকমোহমহোদধৌ নিমগ্নায় উপদিদেশ, গুণাধিকৈৰ্হি গৃহিতোহনুষ্ঠিয়মানশ্চ প্ৰচয়ং গমিষ্যতীতি। তং ধর্ম ভগবতা যথোপদিষ্টং বেদব্যাসঃ সর্বজ্ঞোভগবান্ গীতাখ্যৈঃ সপ্তভিঃ শ্লোকশতৈরুপনিববন্ধ।
এই অনুচ্ছেদটিতে ভগবানের সংজ্ঞা দেওয়া হচ্ছে। হিন্দুধর্মকে আচার্য শঙ্কর যে ভাবে বুঝেছিলেন এবং এই ধর্মের সবকিছুকে যেভাবে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, এই রকম পেছনের দিকে আমরা এক ব্যাসদেবকে পাই আর পুরানে শ্রীকৃষ্ণকে পাই আর আমাদের সময়ে বিবেকানন্দকে পাচ্ছি। মোটামুটি এই তিন চারজনকে অধ্যয়ন করলেই পুরো হিন্দুধর্মকে জানা হয়ে যাবে। প্রথমের দিকে ব্যাসদেব, ব্যাসদেবকে পড়লে শ্রীকৃষ্ণকেও পড়া হয়ে যাবে, তারপর আচার্য শঙ্কর। আর বর্তমান কালে বিবেকানন্দকে পড়তে হবে বা স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলী পড়লেই হবে। আচার্য শঙ্কর ঈশ্বরের খুব সুন্দর বর্ণনা দিচ্ছেন, এত সুন্দর প্রাঞ্জল সংজ্ঞা আর কোথাও পাওয়া যাবে না। ঈশ্বরের বর্ণনা করতে গিয়ে প্রথমে বলছেন 'স চ ভগবান' সেই ভগবান কে? যাঁর মধ্যে ছয়টি ঐশ্বর্য রয়েছে। এই ছয়টি ঐশ্বর্য কি? 'জ্ঞানৈশ্বর্যশক্তিবলবীর্যতেজ্যোভিঃ' জ্ঞান, ঐশ্বর্য, শক্তি, বল, বীর্য ও তেজ। পুরাণ এবং কোথাও কোথাও শাস্ত্রে এই ছয়টিকে অন্য ভাবে বলা হয়েছে কোথাও অণিমাদি অষ্টসিদ্ধির কথা বলা হয়েছে কিন্তু আচার্য শঙ্কর তাঁর নিজের মত ব্যাখ্যা করে গেছেন। এই ছয়টি ঐশ্বর্য ভগবানের মধ্যে সদা সম্পন্নঃ এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য, এই ছয়টি ঐশ্বর্য সব সময় ভগবানের সাথে থাকবে বাইরে থেকে কখনই আসবে না।
ভগবানের এই ষড়ৈশ্বর্য রয়েছে বলে এই ছয়টি ঐশ্বর্য অবতারের মধ্যেও থাকে। এটাই ভগবানের মূল প্রকৃতি। কেউ যদি জিজ্ঞেস করে ভগবান কে? তখন তাকে বলতে হবে যাঁর মধ্যে ষড়ৈশ্বর্য অর্থাৎ জ্ঞান, ঐশ্বর্য, শক্তি বল ও তেজ সব সময় আছে। সাধারণ মানুষের জ্ঞান দিনে দিনে বাড়ে আগে আমি অনেক কিছু জানতাম না, কিন্তু শাস্ত্র অধ্যয়ন করে করে আচার্যের মুখে শাস্ত্রের কথা শুনে শুনে আমার ধীরে ধীরে জ্ঞান বাড়তে থাকে। একটা কিছু বিপর্যয় হলেই আমরা মানসিক ভাবে একেবারে ভেঙে পড়ছি কাজ করতে ইচ্ছে করে না, মন হতাশায় ভরে যায়। তার মানে আমাদের মধ্যে ঈশ্বরীয় গুণ নেই। ভেতরে ঈশ্বরীয় গুণ থাকলে বিপর্যয় হলে ধাক্কা যে খাবে না তা নয়, ধাক্কা লাগবে কিন্তু ধাক্কা খেয়ে আবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়বে।
ক্রমশঃ-

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.