ঋগ্বেদ সংহিতা ভূমিকা-১৫(বেদ-এ শ্লোক সংখ্যা-বিষয়ে)
ঋগ্বেদ আদি যে চতুর্ব্বেদ বিভাগ, এখন সে প্রসঙ্গে আলোচনা করব। এই চার বেদ আবার বিভিন্ন পণ্ডিতগণ কর্ত্তৃক বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত হয়ে থাকে। সে সকল বিভাগে নানা মতান্তর দেখতে পাই। দৃষ্টান্ত-স্বরূপ বেদের ঋকের ও মন্ত্রের সংখ্যা তুলে ধরছি। ঋকের ও মন্ত্রের সংখ্যা-গণনায় বিভিন্ন পণ্ডিত বিভিন্ন মত প্রকাশ করে গেছেন। এক ঋগ্বেদের ঋক্-সংখ্যার বিষয় আলোচনা করলেই বিষয়টি বোধগম্য হতে পারে। সাধারণতঃ ঋগ্বেদের ঋক্-সংখ্যা ১০হাজার ৪০২ হতে ১০ হাজার ৬৬২টি বলা হয়। চরণব্যুহ গণনা করে নির্দ্দেশ করেন, -দশ হাজার পাঁচ শত আশিটি ঋক্ ঋগ্বেদে সন্নিবিষ্ট আছে। যথা,-
“ঋচাং দশসহস্রাণি ঋচাং পঞ্চশতানি চ। ঋচামশীতিঃ পাদশ্চ তৎপারায়ণমূচ্যতে।।”
কিন্তু অধুনাতন সংস্করণে পণ্ডিতগণ গণনা করে দশ হাজার চারশত সতেরটি ঋক্ নির্দ্দেশ করেছেন। এ হিসাবে, একশত তেষট্টি ঋক্ লোপপ্রাপ্ত হয়েছে। এরকম অন্যান্য বেদ সম্বন্ধেও মন্ত্র-সংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটেছে। সামবেদের মন্ত্র-সংখ্যা বিষয়ে চরণব্যুহের মত- “অষ্টসামসহস্রাণি সামানি চ চতুর্দ্দশ।” অর্থাৎ, সাম-মন্ত্রের সংখ্যা আট হাজার চৌদ্দ। মন্ত্র ও ব্রাহ্মণ ভাগ নিয়ে যজুর্ব্বেদের মন্ত্র-সংখ্যা-আঠার হাজার। তন্মধ্যে শুক্লযজুর্ব্বেদের মন্ত্র-পরিমাণ-উনিশ শত। অথর্ব্ববেদের মন্ত্র-পরিমাণ-বার হাজার তিন শত। এ সম্বন্ধে চরণব্যুহের(শৌনকের) উক্তি নিন্মে উদ্ধৃত করা গেল; যথা-
“দ্বাদশানাং সহস্রাণি মন্ত্রাণাং ত্রিশতানি চ। গোপথং ব্রাহ্মণং বেদেহথর্ব্বণে শতপাঠকং।।”
কিন্তু অধুনা অথর্ব্ববেদের শৌনক-শাখাতে মাত্র ছয় হাজার পনেরটি ঋক্ পাওয়া যায়। প্রতি বেদ আবার বিভিন্ন নামধেয় বিভিন্ন পরিচ্ছেদে বিভিন্ন সময়ে বিভক্ত হয়েছিল, বুঝা যায়। শাখা, উপনিষৎ প্রভৃতি ভেদেও বেদ-চতুষ্টয়ের বিভাগ পরিকল্পিত হয়ে থাকে। এক এক বেদের বিষয় স্বতন্ত্রভাবে আলোচনা করলে, কোন্ বেদ কি কি শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়েছিল, তা বুঝতে পারা যাবে।
চলবে-
সনাতন সংবেদ।
কোন মন্তব্য নেই