sanatansangbed

Introduction of SANATAN dharma scriptures

অক্ষয়বট


অক্ষয়বট- প্রয়াগ, ভুবনেশ্বর প্রভৃতি তীর্থ স্থানে এক একটি বটবৃক্ষ রোপিত আছে। প্রবাদ এই, ঐ সকল বট গাছের মৃত্যু নেই। কতকাল হতে চলে আসছে, তবু ঝড়ে একটি শাখা ভাঙ্গে না, রৌদ্রে একটা পাতা শুকায় না। ভক্তি পূর্বক ঐ সকল বৃক্ষে জলসেচন করলে অক্ষয় ফল লাভ হয়। প্রয়াগের অক্ষয় বট এখন কেল্লার ভিতর পড়েছে। বোধ করি ছায়ায় আছে বলে তার বৃদ্ধি নেই, গাছটা নিতান্ত ক্ষুদ্র। জগন্নাথ পুরীতে ও অক্ষয় বটের বিবরণ পাওয়া যায়- 
সুধন্য অক্ষয় বট, সুধন্য সিন্ধুর তট, 
ধন্য নীলাচল তপোবন। (মানসিংহ)। 
প্রয়াগের অক্ষয়বট অতি প্রাচীন বৃক্ষ। পূর্বে ঐ গাছ খোলা স্থানে ছিল; ক্রমে চতুর্দ্দিক মৃত্তিকায় ভরাট হয়েছে, সুতরাং বৃক্ষটি ও নিচে পড়েছে। এলাহাবাদ দুর্গের ভিতর এলেন্‌বরা বারিকের ঠিক পূর্বে পুরাতন মন্দির, মন্দিরের পাশে অক্ষয়বট। তাতে রৌদ্র লাগে না, সেখানে বাতাস খেলতে পায় না, তাই গাছটির বৃদ্ধি নেই। চীন পরিব্রাজক হিয়াং শাং ঐ পুরাতন মন্দিরের উল্লেখ করে গেছেন। তার দক্ষিণে অশোক এবং সমুদ্র গুপ্তের প্রস্তর স্তম্ভ। পূর্বে অক্ষয়বট বেণী ঘাটের অনেক দূরে ছিল। ক্রমে বর্ষার বন্যায় ভাঙ্গনে গঙ্গা যমুনা এর নিকটে এসে পড়ে। অকবর বাদশার সময় হিন্দুরা এই বৃক্ষের মূল হতে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে প্রাণত্যাগ করতেন। এখন আবার কেল্লার নিছে অনেক দূর পর্য্যন্ত বালি পড়ে গেছে, বেণী ঘাট আর অক্ষয় বটের নিকটে নেই। তীর্থ যাত্রীরা প্রয়াগে গেলে এই পুণ্যতরু দেখতে যান। কিন্তু দর্শনের পক্ষে তাঁদের অসুবিধা অনেক। মনে করলেই কেল্লার ভিতরে কেহ প্রবেশ করতে পান না। পাণ্ডারা অনেক সুযোগ করে যাত্রিদের নিয়ে যান। অক্ষয় বটের চতুর্দ্দিক পাকা করে গাঁথা, উপরে ছাদ; গর্তের মধ্যে বৃক্ষ, সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে হয়। ভিতরে অন্ধকার, স্পষ্ট দৃষ্টি চলে না। এই বৃক্ষের পূজা করলে অক্ষয় ফল লাভ হয়। 
পূর্বে গয়াক্ষেত্রে ও একটি অক্ষয়বট ছিল। পাণ্ডবেরা বনবাসে গিয়ে লোমশ মুনির উপদেশানুসারে সেই বৃক্ষ দর্শন করেছিলেন। 
[মহাভারত বনপর্বে এর বিশদ বর্ণনা পাওয়া যায়] 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.