অর্জুন ও দুর্যোধন থেকে শিক্ষনীয়
অর্জুন কৌরবসেনাদের দেখে কারো কাছে না গিয়ে হাতে ধনুক নিলেন (গীতা ১/২০), আর দুর্যোধন পাণ্ডবসেনাদের দেখে দ্রোণাচার্যের কাছে গেলেন এবং তাঁকে পাণ্ডবদের ব্যূহবদ্ধ সৈন্যদের দেখতে বললেন। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে দুর্যোধনের মনে ভয় বাসা বেঁধেছিল(১)। হৃদয়ে ভয় থাকলেও তিনি চালাকি দ্বার দ্রোণাচার্যের প্রসন্নতা আনবার চেষ্টা করেছিলেন; তাঁকে পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করতে চেয়েছিলেন। কারণ দুর্যোধনের হৃদয়ে ছিল অধর্ম, অন্যায় এবং পাপ। অন্যায়কারী পাপী ব্যক্তি কখনো নির্ভীকভাবে সুখশান্তিতে থাকতে পারে না-এই নিয়ম। অপরপক্ষে অর্জুনের মধ্যে ছিল ধর্মভাব, ন্যায়ভাব। তাই আর্জুনকে নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য কোনো চালাকি করতে হয়নি, কোনো ভয় ও তাঁর নেই। যা আছে তা হল উৎসাহ ও বীরত্ব। তাই তো তিনি বীরের মতো সেনা পরিদর্শন করার জন্য ভগবানকে আদেশ করলেন, 'হে অচ্যুত! দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে আমার রথ স্থাপন করুন' (১/২১)। অর্থাৎ যার মধ্যে বিনাশশীল ধন-সম্পত্তি ইত্যাদির জন্য মোহ থাকে, আসক্তি থাকে এবং যার মধ্যে অধর্ম, অন্যায়, কু-ভাব থাকে তার মধ্যে প্রকৃতপক্ষে কোনো বল থাকে না। সে ভিতরে ভিতরে শূন্য হয়ে যায় আর কখনো সে নির্ভয় হতে পারে না। অপরপক্ষে যে নিজ ধর্ম পালনের প্রতি নিষ্ঠাবান থাকে এবং ভগবানের আশ্রিত হয় সে কখনোই ভয় পায় না। তার বল সত্যকার বল হয়। সে সর্বদা নিশ্চিন্ত ও নির্ভয় থাকে। সুতরাং যে সব সাধক নিজের কল্যাণে ইচ্ছুক তাঁদের অন্যায়, অধর্ম ইত্যাদি সর্বভাবে পরিত্যাগ করে একমাত্র ভগবানের শরণাগত হয়ে ভগবানের প্রীতির জন্যই ধর্ম অনুষ্ঠান করা কর্তব্য। জাগতিক বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এবং সুখের প্রলোভনে মোহিত হয়ে কখনো অধর্মের আশ্রয় নেওয়া উচিত নয়, কারণ এসবে মানুষের কখনো ভালো হয় না, বরং খারাপই হয়।
আলোচ্য অংশটুকু সাধক সঞ্জিবনী গ্রন্থ থেকে নেওয়া।
নিবেদনে- সনাতন সংবেদ।
আলোচ্য অংশটুকু সাধক সঞ্জিবনী গ্রন্থ থেকে নেওয়া।
নিবেদনে- সনাতন সংবেদ।
কোন মন্তব্য নেই