হিন্দু ধর্ম মতে সন্তান কত রকমের-
‘সন্তান’ শব্দের অর্থ সংহিতা বা সন্ধি। স্মৃতি, মহাভারত, রামায়ণ অনুসারে ১০টি উপায়ে নারী বা পুরুষ সন্তানের পিতা মাতা হতে পারেন। যেমন-
১) স্বয়ং জাত- স্বামী স্ত্রী থেকে যে সন্তান জন্ম নেয়।
২) প্রণীত- কোন উত্তম পুরুষের কাছ থেকে সন্তান চাওয়া। ইদানিং কালে এগুলো কল্পনা করা যায় না, তবে স্পার্ম ডোনেশন দেখা যায়। অনেক পরম্পরায় গুরুর কাছ থেকেও সন্তান নিতেন। ব্যাসদেব থেকে ধৃতরাষ্ট্র পাণ্ডু, বিদূর এনারা প্রণীত। মহাবীর হনূমানও তাই।
৩) নাতি- বলা হয় নিজের যে নাতি, মেয়ের সন্তান তাকেও নিজের সন্তান হিসাবে দেখা হয়।
৪) পুনঃর্ভব থেকে পৌণর্ভব- একজন মেয়ের আগে বিয়ে হয়েছিল পরে তাঁদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে আবার বিয়ে হয়। অনেকের ভ্রান্ত ধারণা যে হিন্দুদের পুনঃবিবাহ হয় না। এটাই পৌণর্ভব অর্থাৎ দ্বিতীয় বিবাহ এবং এই স্বামী থেকে প্রাপ্ত সন্তান।
৫) কানীন- পিতা মেয়েকে বিয়ে দেবার সময় শর্ত রাখে যে, মেয়ের প্রথম সন্তান তার হবে- এটাই কানীন সন্তান। যেমন পৃথা, পৃথার যখন বিয়ে হয়েছিল তখন বলা হয়েছিল এর প্রথম সন্তান পৃথার পিতাকে দিতে হবে।
৬) ভাগ্নে- বোনের যে সন্তান, তাকেও নিজ সন্তানের মত দেখা হয়।
৭) দত্ত- যখন বাবা মা কাউকে নিজের সন্তান দিয়ে দেয়, এই নাও এই সন্তান তোমার।
৮) কৃৎ- এর অর্থ কেনা। যেমন টাকা পয়সা দিয়ে সন্তান কেনা, এখন যেমন এডোপশন নেওয়া হয়।
৯) কৃত্রিম- আপদ বিপদ বা কোন কারনে যখন কাউকে আবেদন করা হয় তাঁকে সন্তান হিসাবে গ্রহণ করতে। আমরা যেটাকে ডাক বাবা/মা বলি এমন। এভাবে গ্রহণ করা সন্তানও সন্তান। এগুলি নিয়ে মনু সংহিতা বিশদ বর্নণা পাওয়া যায়।
১০) স্বহৌড়- কোন মেয়ে বিয়ের আগেই প্রেগন্যান্ট হয়ে গেল, সেটা যেকারনেই হোক; যেমন কুন্তি ছিল। তাঁকে বিয়ে দেওয়া হল এবং সেখানে তার ঐ সন্তান জন্মে নিল এই সন্তানের পিতৃপিরিচয় হবে বর্তমান স্বামীর। যার থেকে উৎপন্ন সে নয়।
সূত্র- স্মৃতি, মহাভারত, মনুসংহিতা।
শ্রীকৃষ্ণকমল(মিন্টু)
সনাতন সংবেদ
কোন মন্তব্য নেই