sanatansangbed

Introduction of SANATAN dharma scriptures

সনাতন ধর্মে(হিন্দু) বিবাহ-০৭

(এই ধারাবাহিকের শেষ পর্ব অবশ্যই পড়বেন অন্তিম পর্যন্ত।)
অন্যান্য জাতির বিয়ে ব্যক্তিতান্ত্রিক, তাঁর বিবাহ একটি ঘরোয়া ব্যাপার, সুতরাং তাঁর “ভালবাসা’ বা রুচির উপরই তার বিবাহে নারী-নিৰ্বাচন নির্ভর করে।
বৈদিক বিয়ে সমাজতান্ত্রিক। হিন্দু বলেন যে, যখন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ দম্পতিকে সমাজে থাকতে হয়, তখন তাদের বিবাহের উপর আমাদের অনেক শুভাশুভ নির্ভর করে। তাদের সন্তান ঠিক অসুরের মত ঘরপোড়া, খুনি, চাের, ডাকাত, মাতাল বদমাস বা জঘন্য হতে পারে। সুতরাং ভারতীয় সভ্যতার সামাজিক প্রথার ভিত্তি কি? সেই ভিত্তি হল বর্ণাশ্রম(ব্রহ্মচর্য-গার্হস্থ্য-বানপ্রস্থ-সন্ন্যাস)। আমার জন্ম ও জীবন আমি যে বর্ণভুক্ত, তার জন্য।
যে যে-বর্ণে উঠবে বা গুণ অর্জন করবে, সারাজীবন তাকে তার আইন মেনে চলতে হবে। এখন শাস্ত্র বলেন- আমি যদি পুরুষের যথেচ্ছ বিবাহের স্বাধীনতা দেই, তাহলে ফল কি দাঁড়াবে ? তুমি ত প্রেমে পড়লে, কিন্তু রমণীর পড়লে তার গোত্র কি? তার বর্ণ/গুণ কি?.আমাদের শাস্ত্ৰ বলেন যে, যতই দূরসম্পর্ক হোক সগোত্ৰ-বিবাহ অবৈধ। এটা হওয়া একেবারেই উচিত নয় এমনকি আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্র ও একই কথা বলছে, সুতরাং আমাদের শাস্ত্র ঐরকম বিবাহ অবৈধ বলেই ব্যবস্থা দিলেন।
বৈদিক যুগে সব সময়েই যৌবন-বিবাহ হত। সমাজে কিছু অসংগতি সৃষ্টির কারণে, পঞ্চদশ শতাব্দীতে বাল্য বিবাহ প্ৰচলন হয়। ব্ৰহ্মপুরাণে অষ্টমবর্ষীয়া কন্যার বিবাহের কথা যেমন আছে তেমনি ২০ বৎসর বয়স্ক মেয়ের বিবাহের কথাও আছে।
পরিশেষে-
বৈদিক সনাতনের ধর্মে বিবাহ ধারাবাহিক লেখার উদ্দেশ্য ছিল বর্তমান যুগের যুবক যুবতীদের জন্য নিজ সংস্কৃতির গৌরব, কার্য্যকারিতা, উন্নত চিন্তার সাথে পরিচয় করে দেওয়া, বৈবাহিক সম্পর্কের মাঝে নানা পরিবারে যে অশান্তি স্বামী-স্ত্রীতে, বৌ-শাশুড়িতে তার মূল কারণ অশিক্ষা, সমাজ ও জীবন ব্যবস্থা সম্বন্ধে না জানা। একজন নারীর প্রতি আরেকজন নারীই অন্যায় বেশী করে থাকেন। বৈদিক বিবাহের মূলতত্ত্বটি সমাজ ভুলেছেন, আমাদের নারী পুরুষেরা ভুলেছেন। এমনি কন্যা সন্তানের প্রতিও আমাদের সমাজে অবহেলা, যা অজ্ঞতা থেকেই জন্মেছে। সংস্কৃতে কন্যাকে বলা হয় দুহিতা, যার অর্থ যে দোহন করে। কি দোহন করে দেয়? সংসারের সার, জীবনের সার দোহন করে দেয় একটি সংসার ও জাতিকে।
পুত্র অপেক্ষা কন্যা কত বেশী স্নেহশীলা, তা সকলেই জানেন। কন্যা পিতামাতার বাধ্য হয়, তাদের শ্রদ্ধা করে, ভালবাসে বেশী, সেবা ও যত্নে সকলকে তুষ্ট করে। আমরা কুমারী পূজা করি, কিন্তু কন্যার অনাদর করি!

ঈশ্বর সকলের কন্যান করুন, আমাদের শক্তিদিন অজ্ঞতা দূর করে শুদ্ধ পথে শুদ্ধ সংস্কারে ব্রতী হবার।
নিবেদনে- কৃষ্ণকমল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.