sanatansangbed

Introduction of SANATAN dharma scriptures

অজমুখ বা দক্ষ রাজের ছাগল মুখ কেন হয়েছিল?


অজস্য ছাগলস্য মুখমিব মুখং যস্য। 
দক্ষ প্রজাপতি; সতীর পিতা, শিবের শ্বশুর। দক্ষ নারদের কথায় ভুলে শিবকে কন্যাদান করলেন, কিন্তু কুটুম্বিতাটা বেশ সমানে সমানে হল না। দক্ষ মহারাজ চক্রবর্তী বিভব, কত সুখৈশ্বর্য! জামাই তাঁর শশ্মান-বাসী ভাঙ্গড় ভোলানাথ!-ছাই মাখে, সিদ্ধি খায়। দেবতাদের সভা হলে জামাইয়ের জ্বালায় দক্ষরাজকে সেখানে মাথা হেট করে থাকতে হয়। শেষ ভেবে চিন্তে তিনি শিবের অপমান করার জন্য এক যজ্ঞ আরম্ভ করলেন। ত্রিভুবনে নিমন্ত্রণের পত্র গেল। বাকি থাকলেন কেবল প্রাণের নন্দিনী সতী; আর সতীর সম্পর্কে যাঁর সম্পর্ক-নিমন্ত্রণের পত্র পেতে সে শিবও বাকি থাকলেন। কিন্তু বাপের ঘরে অনুষ্ঠান, নিমন্ত্রণ না হলেও মেয়ের মন বুঝে না। সতী বিনা আহবানেই পিত্রালয়ে যজ্ঞ দেখতে আসলেন। দক্ষ সতীকে দেখে মুখে যা আসল তাই বলে সভার মধ্যে শিবের নিন্দা করলেন। শিবপ্রেমতিখারিণী সতীর প্রাণে সে কটুবাক্য যেন শেলের সমান বিঁধল। তিনি এই বলে প্রাণত্যাগ করলেন- তুমি পিতা; আমি কন্যা হয়ে আর কি বলব? কিন্তু যে মুখে শিবের নিন্দা করলে, দেখবে ঐ মুখ ছাগলের মত হবে। বলতে বলতে সতীতে আর সতী নেই, তিনি সকলের সন্মুখে যজ্ঞস্থলে প্রাণত্যাগ করলেন। 
কৈলাসে সংবাদ আসল। ত্রিশূলীর কোপে ত্রৈলোক্য কম্পিত। পাতালে নাগ, শূন্যে যক্ষরক্ষ,-জগৎ টলে উঠল। শিব, বিরূপাক্ষা প্রভৃতি মহাবীরদের কে নিয়ে দক্ষালয়ে গেলেন; পাগল যে মুখে মহাদেবের নিন্দা করেছিল, সেই পাপ মুখ ছিড়ে ফেললেন। অবশেষে শাশুড়ি এসে জামাইয়ের কাছে অনেক স্তবস্তুতি করেন। তাই, দক্ষরাজ পুনর্বার প্রাণ ফিরে পেলেন, কিন্তু জন্মের মত তাঁকে ছাগলের মুণ্ড পরে থাকতে হল। 
নন্দী বলে তব নিন্দা করেছে পাপ।
ছাগমুণ্ড হবে সতীর আছে শাপ।
-ভারতচন্দ্র। 
অনেকে অনুমান করেন, হরিদ্বারের নিকটে কঙ্খল এবং হর-কি-পৈড়ী এই সকল স্থান নিয়ে দক্ষরাজের রাজধানী ছিল। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.