sanatansangbed

Introduction of SANATAN dharma scriptures

সনাতন ধর্মে(হিন্দু) বিবাহ-০৫

(এই ধারাবাহিক লেখার উদ্দেশ্য, স্বজাতিয়দের নিজ ধর্ম সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। যদি আমরা আমাদের এই সংস্কৃতিকে ঠিক ঠিক লালন করি তবে এই ধর্মান্তর, সাংসারিক কলহরূপ অনেক সমস্যার অবসান ঘটবে।)

স্মৃতিকার ভগবান মনু আৰ্য সম্বন্ধে এই সংজ্ঞা দিয়েছেন “সৎসস্তান কামনার ফলে যার জন্ম হয়েছে, সেই আৰ্য”। ভগবানেব নিকট সন্তানদের কামনা না করে যাঁদের জন্ম হয় স্মৃতিকারের মতে তারা অনার্য। সন্তানের জন্য ভগবানের নিকট কামনা করতে হবে। অভিশাপ অসন্তোষের মধ্যে যাদের জন্ম, সংযমের অসামর্থ্য হেতু, উত্তেজনার অতর্কিত সুযোগে যারা জগতে আবির্ভূত হয়, সেই সব সন্তানের কাছে আবার কি আশা করা যায় ?”
দশরথ পুত্ৰেষ্টি যজ্ঞ করেছিলেন, পুত্ৰ পাবার জন্য। অনেক ব্রত ও অনুষ্ঠান এখন বিলুপ্ত হলেও আজও সন্তানবতী নারী ষষ্ঠী পূজাদি করেন ভবিষ্যৎ সন্তানের মঙ্গলের জন্য, তুলসী তলায় বা বিল্বমূলে বসে তিনি সন্তান না হওয়া পর্যন্ত নিত্য জপ ধ্যানে ব্রতী থাকেন, এছাড়া গ্রাম্য দেবতার কাছে, তীর্থ-দেবতার কাছে সন্তানের জন্য ‘মানত’ করা ত আছেই। বিবাহের মন্ত্রে আমরা দেখেছি দম্পতির সম্বন্ধ। গর্ভাধানের মন্ত্রে, সত্ত্বগুণবিশিষ্ট আত্মানন্দময় সন্তানেব কামনা করা হয়। ঋতুমতী কন্যা ভিন্ন গর্ভাধান হয় না।
বিবাহ অনুষ্ঠানে দশবিধ সংস্কারের একটি সংস্কার গর্ভাধান, এর মন্ত্র অর্থ অনুধাবন করে দেখুন কি গভীর দর্শন এতে নিহিত-
‘বিষ্ণু, তোমার গর্ভস্থানকে শক্তি দান করুন, ত্বষ্টা তোমার গর্ভে রূপ নিৰ্মাণ করুন, ভগবতী সিনী বলি এই বধূত গর্ভাধান কর, পদ্মমালাধারী অশ্বিনীকুমারদ্বয় তোমার গর্ভাধান করুন-যে অশ্বিনীকুমারদ্ধয়ের অধিষ্ঠানে সমূৎপন্ন সন্তান দেবকুলের প্রিয়, স্বভাব-নম্র, বিনয়ী, সত্ত্বগুণযুক্ত, সম্পদশালী ও আত্মানন্দময় হয়।’
আমরা মাতৃ প্রণাম মন্ত্রে বলে থাকি- ‘অশেষ দুঃখ ক্লিষ্টা সর্ব্বংসহা’ মায়ের ভালবাসাই আমাদের আদর্শ। মাতৃভক্তির এটাই মূল উৎস। এই তপস্বিনীই আমাকে জগতে এনেছেন, আমি আসব বলেই বৎসরের পর বৎসর ধরে তিনি দেহ পবিত্র রেখেছিলেন, মন পবিত্র রেখেছিলেন, অশন, ভূষন, চিন্তা পবিত্র রেখেছিলেন-তাই তো তিনি আমার পূজ্য।
দেহমনকে পবিত্র ও সংযম করে সন্তানকামী হতে হয়। কারণ জন্মের প্রাক কালীন প্রভাব সমূহকে নিয়মিত করতে হবে, এটাই শাস্ত্রের বিধান। …যে অনুষ্ঠানের দ্বারা সন্তানের উৎপত্তি হয় তা ভগবানেরই পবিত্র প্রতীকস্বরূপ। একটি নুতন জীবাত্মা আবির্ভাব শুভ বা অশুভ সংস্কার হয়ে জগতে আসছে। একটি পবিত্র নুতন জীবাত্মাকে জগতে আনবার জন্য স্বামীস্ত্রীর মিলন-সুতরাং ভগবানের নিকট উহা তাঁদের মিলিত সর্বোচ্চ প্রার্থনা স্বরূপ;-এ কি তামাসার কথা; একি শুধু ইন্দ্রিয়ের পরিতৃপ্তি না, পশু প্রবৃত্তির চরিতার্থতা।
কে জানে, যে সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে সে কোন সাধু, দেবতা, যোগভ্রষ্ট কোন মহাজন অথবা অবতারকল্প পুরুষ কি না? এই জন্য সন্তান আগমনে।
আগামী পর্বে চোখ রাখুন

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.