sanatansangbed

Introduction of SANATAN dharma scriptures

অ-উ-ম

অ-উ-ম


অ-উ-ম, এই তিন বীজ বর্ণে প্রণবের উৎপত্তি। যোগ সাধনের এখানে একটা গূঢ় সন্ধান আছে। যোগীরা বলেন, মন একাগ্র করতে হলে প্রথম অবস্থায় একেবারে সমস্ত ওঙ্কার উচ্চারণ করবে না। আগে ওঁ-কারের আদ্য অক্ষর কেবল অ-কার জপ করা চাই। তার নিয়ম এই, –পদ্ম আসন বন্ধন পূর্বক উন্নত ভাবে বসে মস্তক সন্মুখে বক্র করবে এবং বক্ষের উপর চিবুক লাগাবে। পরে, কণ্ঠের নিম্ন হতে প্লুত অনুদাত্ত স্বরে অ-কার উচ্চারণ করতে থাকবে। ক্রমে তরঙ্গের ন্যায় বক্র করে অল্প অল্প সুর উর্দ্ধে তুলবে এবং প্লুত উদাত্ত স্বরে অকারের উচ্চারণ করবে। পরিশেষে, ক্রমশঃ আবার সুর নামিয়ে প্লুত স্বরিত স্বরে অ-কার উচ্চারণ করবে। এইভাবে নীচ স্বরের অকার হতে অল্পে অল্পে সুর উপরে তুলতে গেলেই উকার আপনি আসে। পরে, উপর হতে সুর নামাবার সময় স্বর পতন কালে অনুনাসিক অকার আপনি এসে পড়ে। এর সঙ্কেত এরকম- 
অ আ ~ ~ আউউ ॥॥ উম্-- ~
যারা যোগিদের মুখে প্রণবগান শুনেছেন, তাদের ঐ সুর হৃদয়ঙ্গম হবার সম্ভাবনা। 
প্রথম প্রথম নির্জন স্থানে উচ্চৈঃস্বরে এই বীজ বর্ণ উচ্চারণ করতে হয়। উত্তমভাবে অভ্যাস হয়ে আসলে, তখন উন্নত মস্তকে ধীরে ধীরে ঐ মন্ত্র জপ করবে, যেন জিহ্বা ও উষ্ঠাদি নড়ে না। এ প্রকার সাধনের ফল এই- জাপকের মন একাগ্র হয়, তিনি দীর্ঘজীবী হন, তাঁহার অন্তরস্থ বায়ু পিত্ত ও শোণিত শুক্র শোধিত হতে থাকে, এবং সমাধির পূর্বাবস্থার মত সাধক নিদ্রাভিভূত হন।
কতকালের পুরাতন কথা এখানে লেখলাম বলে হয়ত অনেকে হেসে ফেলবেন। কিন্তু আর হাসবার দিন নাই। পূর্বে আমাদের দেখে যারা হাসতেন, এখন তারাও মাথায় হাত দিয়ে ভাবতে বসেছেন। সংস্কৃত প্রিয় মোক্ষমূলর সাহেব (Max Muller) লিখেছেন- “ওঙ্কার জপ করে দেখ। প্রথমে এটা অসার বোধ হতে পারে, কিন্তু বাস্তবিক তা নয়। বার বার প্রণব উচ্চারণ করলে ওঙ্কার জপ করা হয়। মনের একাগ্রতা সাধন এবং ব্রহ্মরূপ মহাকেন্দ্রে চিত্ত সন্নিবেশ করা উহার উদ্দেশ্য। হিন্দুরা যাকে মনের একাগ্রতা সাধন বলেন, আমরা তার মর্ম জানি না”।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.