sanatansangbed

Introduction of SANATAN dharma scriptures

দুর্গা পূজায় সনাতন সংগঠন প্রান্তিক মানুষেদের ভাগ্য উন্নয়নে চেষ্টা করেছে


যেহেতু সনাতন সংগঠন পদ পদবীকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেনা, কাজকেই প্রাধান্য দেয় এবং নিজেদের পোগ্রামে স্টেজে কাউকে সিট দিয়ে অপ্রয়োজনীয় সম্মান দেখানোর চেষ্টা করেনা সেহেতু আমাদেরকে কোন ডোনার তেমন ভাবে সহায়তা করেন না। সনাতন সংগঠনের কর্মীরাই এই সংগঠনের ডোনার। সংগঠনের কর্মীরা পূজায় যে খরচ করবে বলে চিন্তা করেছে সেই খরচ থেকে অর্থ বাঁচিয়ে সেই অর্থ দিয়ে প্রান্তিক জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের চেষ্টা করছে।

সনাতন সিলেট ইউনিটের উদ্দোগে সিলেটের সুনামগঞ্জের শাল্লা থানার যাত্রাপুর গ্রামের একটা দরিদ্র পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে শেলায় মেশিন (পা-শেলায় মেশিন) প্রদান করা হয়েছে এবং ৭১ জন দরিদ্র বিধবা নারীকে নতুন বস্ত্র প্রদান করা হয়েছে, ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী গঠনের জন্যে ৩৫ টি গুরুত্বপূর্ণ বই প্রদান করা হয়েছে, ৩০০ এর অধিক দরিদ্র হিন্দুকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান ও প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান করা হয়েছে।

সনাতন ঢাকা ইউনিট থেকে কুড়িগ্রাম জেলার কামারপাড়া গ্রামের একটা দরিদ্র পরিবারকে স্বাবলম্বি করার উদ্দেশ্যে ভেনগাড়ি ও একটা শেলাই মেশিন (পা-শেলাই মেশিন) প্রদান করা হয়েছে, ঐ এলাকার একটা স্কুলের দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে ৩২ টি স্কুল বেগ, খাতা, কলম, জ্যামিতি বক্স সহ শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়েছে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নতুন বস্ত্র কেনার জন্যে ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে, দুটা স্বামী বিবেকানন্দের বানীর বই ও একটা করে গীতা প্রদান করা হয়েছে।

সনাতনের চট্টগ্রাম ইউনিট থেকে ফটিকছড়ির সাহাপাড়া, দক্ষিণ হিন্দুপাড়া,বারোমাসিয়া চা বাগান, ঈদিলপুর ও সরকার হাটে দরিদ্র পরিবারের কিছু মানুষদের বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে, একটি দরিদ্র পরিবারকে শেলায় মেশিন প্রদান করে তাঁদের স্বাবলম্বী করার বিষয়ে সহায়তা করা হয়েছে, শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।

ধূতি উৎসবের মাধ্যমে ধূতিকে নতুনপ্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় করতে আমরা সাধ্যমত প্রচারণা চালিয়েছি। আমাদের ঐতিহ্য আমাদের অহংকার। আমাদেরকেই আমাদের ঐতিহ্যের ধারক বাহক হতে হবে। সেই সাথে সাথে ২০০৭ সাল থেকেই আমরা সাত্তিক পূজার জন্যে যে সব সংস্কার প্রস্তাব করে আসছি সেই বিষয়ে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষদের সচেতন করার চেষ্টাও করেছি।

আমরা আমাদের সাধ্যমত প্রান্তিক মানুষদের সহায়তা করতে চেষ্টা করেছি। আমরা মনে করি লক্ষ লক্ষ টাকা তামসিকতায় ব্যয় না করে পিছিয়ে থাকা মানুষ গুলিকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখাটাই গুরুত্বপূর্ণ কাজ এবং এটাই আমাদের জন্যে পূজা। শব্দ দূষণ, অতিমাত্রায় আলোকসজ্জা, স্বাবলম্বী মানুষদের ডেকে ডেকে প্রসাদ খাওয়ানোর নামে অর্থের অপচয় করা, মাদকের পেছনে ব্যয় করার চাইতে নিজেদের কিছু অর্থকে প্রান্তিক ও পিছিয়ে থাকা মানুষদের এগিয়ে নিতে প্রদান করলে আমরা পূর্বের তুলনায় শক্তিশালী হতে পারবো। পূজার প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু বিলাসিতার প্রয়োজন নেই। রাজা নেই রাজ্য নেই সুতরাং রাজসিকতা ও তামসিকতার কোন প্রয়োজন নেই বলেই আমরা মনে করি।

হরিজন, জেলে, চা বাগানের শ্রমিক, ত্রিপুরা সপ্রদায় সহ পিছিয়ে থাকা হিন্দুদের সামান্য সহায়তা দিয়ে ধর্মান্তরিত করছে বুদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারিরা। আর উগ্রাবাদি জঙ্গি গুলি বলপূর্বক ধর্মান্তরিত করছে তাঁদের। তাঁদের পাশে না দাঁড়িয়ে পূজার নামে রাজসিকতা, তামসিকতা ও বিলাসিতা করাকে আত্মহনন বলা ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে?

সারা বাংলাদেশে যতগুলি দুর্গা পূজা হয়েছে ততগুলি পূজার আয়োজন থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা বাঁচিয়ে অবহেলিত, দরিদ্র ও পিছিয়ে থাকা প্রান্তিক পরিবারকে সহায়তা করলে কতগুলি পরিবার সহায়তার আওতায় আসতো একবার ভেবে দেখুন। এই ভাবে সহায়তা করতে পারলে ঐক্য গঠনে খুব বেশি বেগ পেতে হবেনা আমাদের।

প্রয়োজনের কারণে পরিবর্তন প্রয়োজন-
শ্রীঅশোক চক্রবর্তী

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.