শারদ অর্ঘ ১৪২৫ ও সনাতন চাঁদপুর ইউনিট
বাঁধন দে- সাধারণত আমি দূর্গাপূজার সময় বাড়ীতেই থাকি, মেহের কালীবাড়ির পাশেই আমার পৈতৃক ভিটা। ছোটবেলা থেকে এখানেই পূজা দিয়ে আসছি৷ জীবনের প্রতিটা দূর্গাষ্টমীর অঞ্জলী এখানেই দিয়েছি। মায়ের বাড়িতে পূজার একটা বিশেষত্ব আছে ; আড়ম্বর কম, কিন্তু মনে দাগ কাটবেই। হয়তো মায়েরই মহিমা।
গত দুবছর যাবত সনাতন চাঁদপুর ইউনিট এর সাথে যুক্ত আছি। আরো যুক্ত আছে কাছের ভাইবন্ধুরা, যাদের উপস্থিতি উৎসবে ভিন্ন একটা মাত্রা যোগ করেছে, পূজা আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
সনাতন এর এবারের পূজা উদযাপনের একটা বড় চমক ছিল ধূতি উৎসব৷ গতবছর চট্টগ্রাম ইউনিটের দাদাদের ধূতি-পাঞ্জাবী পড়ে মন্ডপ পরিদর্শন করতে দেখে মনে যে আকুতি হয়েছিলো, এবার সেটা পূর্ণ হয়ে গেলো। এজন্য সোহাগ মজুমদার মামা কে অনেক ধন্যবাদ, তিনি প্রস্তাবনার পাশাপাশি আমাদের সবার জন্য পাঞ্জাবিগুলোর ব্যবস্থাও করে রেখেছিলেন। লোকমুখে বেশ প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়েছি আমরা।
গতবারের মত এবারেও সনাতন নিজস্ব কিছু টিশার্ট বানায় এবং সেগুলো বিক্রির মাধ্যমে পাওয়া লভ্যাংশ দিয়ে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার খরচ টা উঠে আসে। পূজা উপলক্ষ্যে সূচীপাড়া মজুমদার বাড়ি পূজামন্ডপ, ছিখটিয়া এবং মেহার কালীবাড়ি সার্বজনীন পূজামন্ডপে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠিত হয়।
সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় ছিলো বেদ ও গীতা থেকে পাঠ, বিভিন্ন প্রণাম মন্ত্র, আরতি প্রতিযোগিতা, ধর্মীয় সংগীত, মায়েদের উলুধ্বনি ও শংখধ্বনি প্রতিযোগিতা। বেশ উৎসবমুখর পরিবেশে এবং চমৎকার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা বিজয়ী নির্বাচনে সক্ষম হই। বিজয়ীদের পুরষ্কিত করা হয়। সনাতনের লক্ষ্য ও উদ্দ্যেশ্য সম্পর্কে সবাইকে বলা হয়। পুরো অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দ্বায়িত্ব তুলে নিয়েছে বন্ধুপ্রতিম বড়ভাই দীপক রায় ও আনন্দ প্রসাদ সাহা। বাদ্যযন্ত্র পরিচালনায় সহায়তা করেছে প্রিয় ছোটভাই জয় পাল ও দেবাশীষ। নির্বাচন করা হয় সেরা কর্মী। চাঁদপুর ইউনিট থেকে সেরা কর্মী নির্বাচিত হোন হৃদয় দাস, দীপক রায়, মিথুন কর্মকার.
দশমীর দিন সনাতন কর্তৃক মাতৃবন্দনার আয়োজন করা হয়, সন্তানেরা মায়েদের পূজা প্রদানপূর্বক আশীর্বাদ গ্রহণ করে। এছাড়াও এবারের পূজায় DJ গানের ব্যবহার যথাসম্ভব হ্রাস করা হয়। ভবিষ্যতেও সনাতন এ ব্যাপারে সদা সতর্ক থাকবে।
এত সব স্মৃতি মনের কোঠায় জমতে জমতে মায়ের বিদায়ের লগ্ন ঘনিয়ে এলো। আমরা আরতি করতে করতে নদীতীরে গেলাম এবং মায়ের বিসর্জন দিয়ে ফিরে এলাম, বুকে আশা বাঁধা আছে- আসছে বছর আবার হবে।
শারদ অর্ঘ অনুষ্ঠানের স্থির চিত্র সমূহ-
কোন মন্তব্য নেই