নিত্য স্বাধ্যায়ঃ বেদমন্ত্র-০৩
ওঁ এই অভিধানাত্মক অক্ষর, ক্ষরণরহিত, বিনাশ বা ব্যয় রহিত পরমপদ স্বরূপ পরমব্যোমই এই সমস্ত স্থূল সূক্ষ্ম বস্তু পরিপূরিত এই জগৎ। এই পরমপদ ওঁকারের সুস্পষ্ট বিবরণ এই যে ভূত ভবিষ্যৎ বর্তমান এই সমস্ত ওঁ কারই। এবং অন্য যা ত্রিকালাতীত তাও ওঁ কারই।
পরমপদ ওঁকার ত্রিপাদে সদা শান্ত, চলনরহিত পরিপূর্ণ। একপাদ মাত্র মায়াতে যাতায়াত করেন। সেই অবিনাপাদে এই জগৎ ভাসে। নীল আকাশে মেঘ ভেসে নীল আকাশকে যেমন খণ্ডমত করে সেইরূপ পরিপূর্ণ পরমপদের একদেশে মায়া ভেসে পূর্ণকে যেন খণ্ডমত করে এবং সেই খণ্ডমত ব্ৰহ্মকে জগৎ রূপে বিবর্তিত করে। এই যে পরিদৃশ্যমান জগৎ দেখা যাচ্ছে তা ওঁকারেরই বিবৰ্ত্ত। ওঁকারই সর্বদা আছেন। মায়া দ্বারা তিনিই জগৎরূপে ভেসেছেন; রজ্জু রজ্জুই আছে কিন্তু অজ্ঞান আবরণে রজ্জুই যেমন সর্পরূপে ভাসে সেইরূপ। মানুষ অজ্ঞানে রজ্জুকে সর্পরূপে দেখে। কিন্তু ব্ৰহ্মরজ্জু আপনাতে মায়া উঠলে আপনাকেই জগৎ রূপসৰ্প দেখেন। পূৰ্ণ পূর্ণ থেকেও আত্মবিস্মৃতি হয়ে যেন আপনাকে জগৎ মত হতে দেখেন। শুধু এই বর্তমান জগৎরূপেই যে দেখেন তা নয় কিন্তু যত যত জগৎ হয়ে গেছে এবং যত যত জগৎ হবে সমস্তকেই ঐ ভাবে দেখেন। তাই বলা হল ভূত ভবিষ্যৎ বর্তমানে যা কিছু ছিল, হবে, হচ্ছে তাই ওঁকারেরই বিবৰ্ত্ত মাত্ৰ। যা কালত্ৰয়বত্তী তা ওঁকারই। আবার যাহা ত্ৰিকালাতীত, মহাপ্ৰলয়ে সমস্ত লয় হয়ে গেলে যে সাম্যাবস্থারূপিণী অব্যক্ত প্ৰকৃতি কালত্রয়ে পরিচ্ছেদ যোগ্য থাকেন না, অর্থাৎ জগৎ রূপ কার্যের কারণস্বরূপিণী প্ৰকৃতি প্ৰভৃতিও ওঁকার হতে অতিরিক্ত নন।
স্মরণ রাখ-
(১) পরমপদ, পরামব্যোম স্বরূপ ওঁকারকে জানলেই অদ্বৈত বোধ হবে।
(২) অদ্বৈত বিবৰ্ত্তিত হয়ে যখন দ্বৈতরূপে ভাসেন, সেই দ্বৈত যে মিথ্যা এটি জানলেই দ্বৈতের উপশমে অদ্বৈত ভাবে স্থিতি হবে।
Ad share option.
উত্তরমুছুন