ঋগ্বেদ সংহিতা(ভূমিকা-০৩)
বেদ ও তাঁর উৎপত্তি বিষয়ে বিতর্ক-
প্রশ্ন উঠতে পারে, বেদ নামে প্রচারিত যে গ্রন্থ প্রভৃতি দেখা যায়, তার সমস্ত তবে কি? ঐ যে ঋগ্বেদ, ঐ যে সামবেদ, ঐ যে যজুর্বেদ, ঐ যে অথর্ববেদ- এ সকল কি তবে বেদ নয়? আর যদি এই সকল গ্রন্থকে বেদ বলে গ্রহণ করতে হয়, তবে তাদের অনাদিত্ব অপৌরুষত্ব ও নিত্যত্ব কি প্রকারে স্বপ্রমাণ হতে পারে? এ প্রশ্নের উত্তর বড়ই কঠিন। এ প্রশ্নের সমাধানের জন্য দর্শনকারদের মস্তক বিশেষভাবে আলোড়িত হয়েছে। এই সংশয়ের নিরসন উদ্দেশেই অনন্ত শাস্ত্রের অভ্যুদয় ঘটেছে। বিষয়টি হৃদয়ে ধারণা করবার উপযোগী; যা ভাষায় বুঝানোর সামর্থ্য অতি অল্প লোকেরই আছে। তথাপি আমরা এখানে স্থুলভাবে প্রসঙ্গের আলোচনা করছি। এই যে মন্ত্র প্রভৃতি- ঋক্ সাম যজুঃ অথর্ব বেদের মধ্যে বিন্যস্ত রয়েছে, আমরা মনে করি, হিন্দু মাত্রই মনে করেন, এই মন্ত্রগুলি-নিত্য সনাতন স্বপ্রমাণ ও অপৌরুষেয়; আর, ঐ মন্ত্রগুলি যে উদ্দেশ্যে প্রযুক্ত, তার দ্বারা সে উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়। ভাবে, যে অবস্থায়, যে স্বরে, যে অধিকারীর যে মন্ত্র উচ্চারণ করা প্রয়োজন, সকলে তা পারে না বলেই সে মন্ত্রের ফল প্রত্যক্ষ হয় না। অনুষ্টুভ প্রভৃতি যে ছন্দ আছে, উদাত্ত সমুহে যে স্বর আছে, মন্ত্রচিত সংযম প্রভৃতির যে যজ্ঞবিধি আছে, তার অনুবর্ত্তন না করে, সে সমস্তে সিদ্ধিলাভে সমর্থ না হয়ে, বিকৃত মন্ত্রে, বিকৃত ব্যবহারে, সুফল-লাভের আশা দুরাশা মাত্র। একটা স্থুল দৃষ্টান্ত দিয়ে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করা যাক। মনে করুন- কারও নাম জগদীশ; যদি কেউ জগদীশকে জ্যোতিষ বলে ডাকে-জগদীশ কি তার উত্তর দিবেন? কে কাকে ডাকছে মনে করে তিনি নিশ্চয়ই তাকে উপেক্ষা করবেন। কিন্তু যদি কেহ জগদীশকে তাঁর প্রকৃত নাম ধরে ডাকতে পারেন, তাহলে নিশ্চয়ই জগদীশ সে ডাকে শুনে ইসারা দিবেন। অধিকারী অনধিকারীর প্রসঙ্গও এই সূত্রে উঠতে পারে। মনে করুন, জগদীশ-সম্ভ্রান্ত লোক; পথে কতকগুলি নীচ-লোক তাঁর নাম উল্লেখ করে যদি আহ্বান করে, তিনি তাতে কখনই কর্ণপাত করবেন না, তারা তাকে আহ্বান করছে বলে মনে করতে পারবেন না। তাঁর সাথে সম্বন্ধ-বিশিষ্ট ব্যক্তিই তাঁকে আহ্বান করতে পারে। এই সাধারণ জ্ঞান থেকেই বুঝতে পারি, বেদমন্ত্র প্রভৃতি যাঁর উদ্দেশ্যে প্রযুক্ত, তাঁর সাথে সম্বন্ধ বিশিষ্ট হওয়ার যোগ্যতা লাভ করেছে যে জন, সে’জনই তাঁকে ডাকার অধিকারী,- সে জনের আহ্বানেই, তাঁর কাছে পৌঁছে যাবে। এভাবে বিচার করলে, মন্ত্র সমূহের নিত্যত্ব এবং প্রামাণ্য বিষয়ে সকল সংশয় দূরীভূত হয়। স্বরূপতত্ত্ব উপলব্ধি হয় না বলেই, বেদ-বিষয়ে নানা সংশয়-প্রশ্ন জাগরিত হয়, বেদের উৎপত্তি ও রচনা সম্বন্ধে নানা মত দেখা যায়। অপিচ, যে বস্তু যত দূর-অতীতের সাথে সম্বন্ধ-যুক্ত, যে দূর-অতীতে স্মৃতি পৌঁছাতে পারে না, তার বিষয়ে কল্পিত কথা নানা আকারে প্রকাশ পেয়ে থাকে। আবার, যাঁর দৃষ্টি যতদূর সীমাবদ্ধ, পুরাতন সনাতন সামগ্রীর উৎপত্তি-বিষয়ে তিনি সেরকম সময় নির্দেশ করতে প্রয়াস পান।
অর্থাৎ, ‘সৃষ্টির আদিভূত যে পুরুষ, তাঁর হতে ঋক্ ও সাম উৎপন্ন হয়েছিল, তা হতেই ছন্দসকল ও যজুঃ জন্মেছিল।’ এ উক্তি অপেক্ষা প্রাচীনত্বের প্রমাণ অধিক আর কি হতে পারে? সৃষ্টির আদিতে ‘বেদ’ ছিল, এ সংবাদ সকল শাস্ত্রই ঘোষণা করেছেন। আবার সৃষ্টি যখন অনাদি বলে প্রতিপন্ন হয়, তখন বেদও অনাদি বলে প্রতিপন্ন হয়ে থাকে। সুতরাং বেদের জন্মকাল কে নির্ণয় করবে? তারপর, বেদের যে কেউ রচয়িতা আছে, অর্থাৎ সূক্ত-বিশেষ যে ঋষি-বিশেষের রচনা, তাও সপ্রমাণ হয় না। যে যে মন্ত্র যে যে ঋষির নামে প্রচারিত, তাঁরা সেই সেই মন্ত্রের প্রয়োগকর্ত্তা বলা যেতে পারে; কিন্তু তাঁদেরকে রচয়িতা বলতে পারা যায় না। অধুনা দেখতে পাই, অনেক সংসারে পুরুষ-পরম্পরা-ক্রমে অনেক মন্ত্র প্রচলন আছে। পিতা বা পিতামহ, পুত্র বা পৌত্রকে সে সেই মন্ত্র শিক্ষা দিয়ে গেছেন; অথবা পুত্রের বা পৌত্রের শিক্ষার জন্য তার সমুদায় লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তাই বলে তাঁরা সে মন্ত্রের রচয়িতা নন। পিতা বা পিতামহ তাঁদের পূর্ব্বপুরুষ হতে সেসকল মন্ত্র প্রাপ্ত বলে বুঝতে পারা যায়। এভাবে অনেক মন্ত্রের আদি-অনুসন্ধানের অতীত হয়ে পড়ে। দৃষ্টান্ত স্থানে, ব্রাহ্মণের গায়ত্রী মন্ত্রের উল্লেখ করতে পারি। পুত্র পিতার নিকট হতে, পিতা-প্রপিতামহ ক্রমে, ঐ মন্ত্রের অধিকারী হয়ে আসছেন। সন্ধান করতে গেলে, ঐ মন্ত্র প্রথম কার নিকট হতে কোন জন প্রাপ্ত হয়েছিলেন, কখনই তা নির্দ্দেশ করা যায় না। এভাবে বুঝতে পারি, যে বংশে যে মন্ত্র চলে আসছে, সেই বংশের পূর্বপুরুষ যাঁর অস্তিত্ব যখন সন্ধান করে পাওয়া যায়, তাঁকেই তখন স্থূল-দৃষ্টি-সম্পন্ন মানুষ সেই মন্ত্রের রচয়িতা বলে ঘোষণা করেছে; পরন্তু, তিনি রচয়িতা নন, প্রয়োগকর্ত্তা মাত্র। এরূপ আমরা বলতে পারি, সৃষ্টির আদি-কাল থেকে প্রচলিত ভগবানের উপাসনা বা স্তোত্র-বাক্যে যাঁদের রচনা বলে পরিচিত হয়, তার সমুদায় তাঁদের রচনা নয়,তাঁদের প্রবত্তনা মাত্র। এরূপে বুঝা যায়, বেদ-যা প্রকৃত বেদ, তা মানুষের রচিত নয়, তা কালের গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ নয়। কাঠের মধ্যে যেমন সূক্ষ্মভাবে অগ্নি অবস্থিত আছে এবং বাইরের দৃষ্টিতে যেমন সেই অগ্নি প্রত্যক্ষ হয় না, পরন্তু পরস্পর সংঘর্ষে সেই অগ্নির অস্তিত্ব যেমন প্রকাশ পায়; গায়ত্রি প্রভৃতি মন্ত্রও সেরূপ স্বতঃশক্তি সম্পন্ন;- যথাযথ বিনিয়োগ-ক্রমে এর বিকাশ হয় মাত্র। ভাষা পরিবর্ত্তিত হতে পারে; শব্দের রূপান্তর হতে পারে; ধ্বনি বিপর্য্যস্ত হয়ে আসতে পারে; আর সেহেতু শক্তি বিকাশ পেতে পারে না, সুতরাং ভ্রান্তি এসে উপস্থিত হতে পারে; কিন্তু যা বেদ, যা জ্ঞান তাই অনাদি অব্যয় অবিকৃত।
বেদের বয়স ও রচয়িতা-প্রসঙ্গে-
পাশ্চাত্য মতের অবলম্বনে প্রত্নতাত্ত্বিকদের গবেষণা ক্রমে বেদের বয়স তাই চার হাজার বৎসরের অধিক প্রতিপন্ন হয় না। খৃষ্টজন্মের দুই সহস্র বৎসরের অধিক পূর্বে যে বেদের জন্ম হতে পারে; পাশ্চাত্য-শিক্ষিত অধিকাংশ পণ্ডিত তা অনুমান করতেই সঙ্কুচিত হন। তাদের সে দৃষ্টির ফলে, বেদের উৎপত্তিকাল গণনাঙ্কের গণ্ডীতে নির্দ্দিষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এই কালনির্ণয়ে এতই মতভেদ দেখতে পাই যে, তার কোনও মতের উপর আস্থা স্থাপন করতে পারা যায় না। কেউ বলেন, ২০০০ খৃষ্টাব্দ পূর্ব, কেউ বলেন ৫০০০ খৃষ্টাব্দ পূর্ব, কেউ বলছেন- স্মরণ অতীত কাল পূর্বে বেদের উৎপত্তি হয়েছিল। এরকম নানা শ্রেণীর লোকের নানা মত দেখতে পাওয়া যায়। বেদের বয়স সম্বন্ধে যেমন বিতণ্ডা, এর রচয়িতা-সম্বন্ধেও সেরকম বিতণ্ডা দেখতে পাই। অধুনা-প্রচলিত ঋগ্বেদ প্রভৃতি যে সকল শাস্ত্র দেখতে পাই, তার সুক্ত-বিশেষের রচয়িতা বলে এক এক ঋষির নাম প্রকাশিত হয়েছে। পুরাতন পুঁথি পত্রে সূক্তের সঙ্গে সঙ্গে, মন্ত্রের বিনিয়োগকর্ত্তা এক এক ঋষির নাম সন্নিবিষ্ট আছে; তা দেখে তাঁরাই সেই সেই সূক্ত রচনা করেছেন বলে প্রচার করা হয়ে থাকে। বেদের উৎপত্তি-সম্বন্ধে, বেদের রচনা-সম্বন্ধে, এরকম নানা জনের নানা মত দেখতে পাই। যেখানে এত মতবিরোধ, সেখানে কোন্ মতে কে আস্থা স্থাপন করতে পারেন?বিবাদ নিরসনে শাস্ত্র ও যুক্তি-
এ ক্ষেত্রে, ‘বেদ’ যে কি- তা কিভাবে সিদ্ধান্ত হতে পারে? যেখানে মানুষের গবেষণা প্রতিহত হয়, সেখানে ঋষি-বাক্যের শাস্ত্র-বাক্যের সার্থকতা মানতে হয়। যা পুরাতন, যা সনাতন, অধুনাতন তার কি সাক্ষ্য দিবে? মহর্ষি পরাশর বলেছেন- “ন কিশ্চিৎ বেদকর্ত্তা চ বেদস্মর্ত্তাশ্চতুর্ম্মত্থঃ।”(পরাশর-সংহিতা)। অর্থাৎ, বেদের রচনাকর্ত্তা কেউ নেই; চতুর্ম্মুখ যে ব্রহ্মা, তিনিও বেদের রচয়িতা নহেন,-স্মরণকর্ত্তা মাত্র। তবেই বুঝা যায়, ব্রহ্মা যিনি বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা বলে বিঘোষিত হন, তাঁরও পূর্ব্বে-সৃষ্টিরও পূর্বে, বেদমন্ত্র তাঁর স্মৃতিমূলে বিদ্যমান ছিল। মহর্ষি মনু (মনুসংহিতা, প্রথম অধ্যায়, ২১তম শ্লোকে) বলেছেন-
সর্ব্বেষান্তু স নামানি কর্ম্মাণি চ পৃথক্ পৃথক্।
বেদশব্দেভা এবাদৌ পৃথক্ সংস্থাশ্চ নির্ম্মমে ॥
অর্থাৎ- সৃষ্টির আদিতে সেই পরমাত্মা, বেদের উপদেশ অনুসারে, পৃথক্ পৃথক্ নাম, পৃথক্ পৃথক্ কর্ত্তা, পৃথক্ পৃথক্ বৃত্তি-বিভাগ নির্দেশ করে দিলেন। এতেও বুঝা যায়, এই পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বেও বেদ ছিল; আর সেই বেদ-অনুসারে সৃষ্ট-পদার্থের নাম কর্ম ও বৃত্তি প্রভৃতি নির্দ্দিষ্ট হয়েছিল। যে বেদকে অধুনাতন পাশ্চাত্য পণ্ডিত গণ পৃথিবীর আদি-গ্রন্থ বলে নির্দেশ করেন, সেই ঋগ্বেদও(পুরুষ-সূক্তে) উক্ত আছে,-
তস্মাৎ যজ্ঞাৎ সর্ব্বহুত ঋচঃ সামানি জজ্ঞিরে।
ছন্দাংসি জজ্ঞিরে তস্মাৎ যজুস্তস্মাদজায়তে ॥
অর্থাৎ, ‘সৃষ্টির আদিভূত যে পুরুষ, তাঁর হতে ঋক্ ও সাম উৎপন্ন হয়েছিল, তা হতেই ছন্দসকল ও যজুঃ জন্মেছিল।’ এ উক্তি অপেক্ষা প্রাচীনত্বের প্রমাণ অধিক আর কি হতে পারে? সৃষ্টির আদিতে ‘বেদ’ ছিল, এ সংবাদ সকল শাস্ত্রই ঘোষণা করেছেন। আবার সৃষ্টি যখন অনাদি বলে প্রতিপন্ন হয়, তখন বেদও অনাদি বলে প্রতিপন্ন হয়ে থাকে। সুতরাং বেদের জন্মকাল কে নির্ণয় করবে? তারপর, বেদের যে কেউ রচয়িতা আছে, অর্থাৎ সূক্ত-বিশেষ যে ঋষি-বিশেষের রচনা, তাও সপ্রমাণ হয় না। যে যে মন্ত্র যে যে ঋষির নামে প্রচারিত, তাঁরা সেই সেই মন্ত্রের প্রয়োগকর্ত্তা বলা যেতে পারে; কিন্তু তাঁদেরকে রচয়িতা বলতে পারা যায় না। অধুনা দেখতে পাই, অনেক সংসারে পুরুষ-পরম্পরা-ক্রমে অনেক মন্ত্র প্রচলন আছে। পিতা বা পিতামহ, পুত্র বা পৌত্রকে সে সেই মন্ত্র শিক্ষা দিয়ে গেছেন; অথবা পুত্রের বা পৌত্রের শিক্ষার জন্য তার সমুদায় লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তাই বলে তাঁরা সে মন্ত্রের রচয়িতা নন। পিতা বা পিতামহ তাঁদের পূর্ব্বপুরুষ হতে সেসকল মন্ত্র প্রাপ্ত বলে বুঝতে পারা যায়। এভাবে অনেক মন্ত্রের আদি-অনুসন্ধানের অতীত হয়ে পড়ে। দৃষ্টান্ত স্থানে, ব্রাহ্মণের গায়ত্রী মন্ত্রের উল্লেখ করতে পারি। পুত্র পিতার নিকট হতে, পিতা-প্রপিতামহ ক্রমে, ঐ মন্ত্রের অধিকারী হয়ে আসছেন। সন্ধান করতে গেলে, ঐ মন্ত্র প্রথম কার নিকট হতে কোন জন প্রাপ্ত হয়েছিলেন, কখনই তা নির্দ্দেশ করা যায় না। এভাবে বুঝতে পারি, যে বংশে যে মন্ত্র চলে আসছে, সেই বংশের পূর্বপুরুষ যাঁর অস্তিত্ব যখন সন্ধান করে পাওয়া যায়, তাঁকেই তখন স্থূল-দৃষ্টি-সম্পন্ন মানুষ সেই মন্ত্রের রচয়িতা বলে ঘোষণা করেছে; পরন্তু, তিনি রচয়িতা নন, প্রয়োগকর্ত্তা মাত্র। এরূপ আমরা বলতে পারি, সৃষ্টির আদি-কাল থেকে প্রচলিত ভগবানের উপাসনা বা স্তোত্র-বাক্যে যাঁদের রচনা বলে পরিচিত হয়, তার সমুদায় তাঁদের রচনা নয়,তাঁদের প্রবত্তনা মাত্র। এরূপে বুঝা যায়, বেদ-যা প্রকৃত বেদ, তা মানুষের রচিত নয়, তা কালের গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ নয়। কাঠের মধ্যে যেমন সূক্ষ্মভাবে অগ্নি অবস্থিত আছে এবং বাইরের দৃষ্টিতে যেমন সেই অগ্নি প্রত্যক্ষ হয় না, পরন্তু পরস্পর সংঘর্ষে সেই অগ্নির অস্তিত্ব যেমন প্রকাশ পায়; গায়ত্রি প্রভৃতি মন্ত্রও সেরূপ স্বতঃশক্তি সম্পন্ন;- যথাযথ বিনিয়োগ-ক্রমে এর বিকাশ হয় মাত্র। ভাষা পরিবর্ত্তিত হতে পারে; শব্দের রূপান্তর হতে পারে; ধ্বনি বিপর্য্যস্ত হয়ে আসতে পারে; আর সেহেতু শক্তি বিকাশ পেতে পারে না, সুতরাং ভ্রান্তি এসে উপস্থিত হতে পারে; কিন্তু যা বেদ, যা জ্ঞান তাই অনাদি অব্যয় অবিকৃত।
চলবে-
নিবেদন- সনাতন সংবেদ
কোন মন্তব্য নেই