প্রতিমা বিসর্জন প্রসঙ্গে
একটা সময় পুকুর অনেক বেশি ছিল কিন্তু পূজার সংখ্যা অনেক কম ছিল। এখন পুকুর ভরাট করে করে দালান বানানো হচ্ছে আর একটা পূজা ভেঙ্গে তিন থেকে পাচটা পূজা হচ্ছে। নদীগুলি অপরিকল্পিত শহরের প্রভাবে ভীষণ ভাবে দূষণ যুক্ত হয়ে গেছে। বুড়িগঙ্গা নদীকে তো মৃত বলেই ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ গিয়েছিলাম সীতাকুণ্ডে উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করার জন্যে। সেখানের ব্যাস কুণ্ডে গিয়ে দেখি অনেক গুলি প্রতিমা ভাসছে জলে। ব্যসকুণ্ড ছোট একটা পুকুর। বৈশাখ মাসে জল একেবারেই কম থাকে। কিছুদিন আগেই বাসন্তী পূজা হয়েছে। ২০ থেকে ২৫ টা প্রতিমা সেখানে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। প্রতিমা যে রং দিয়ে গড়া হয় এবং বস্ত্রের যে রং সেই রং গুলি প্রানীর জন্যে খুবই ক্ষতিকারক হয়। জলে সেই রং মিশে গেলে জলও বিষাক্ত হয়ে পরে। শুধু ব্যাসকুণ্ড নয় যেখানেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হোক না কেন এই দূষণ থেকে মুক্ত থাকা যাবেনা।
প্রতিবছর পূজার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রতিমার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্বে পুকুরের সংখ্যা বেশি ও প্রতিমার সংখ্যা কম হওয়ার কারণে দূষণটা সহনীয় ছিল। এখন উলটো হওয়ার কারণে দূষণের মাত্রাটা সীমাহীন হয়ে গেছে। দূষণ যুক্ত পুকুরে স্নান করলে, জল ও মাছ খেলে সেই ক্ষতিকারক উপাদান গুলি মানব শরীরেও প্রবেশ করবেই।
সনাতন ধর্ম প্রক্রিতিবাদি ধর্ম। প্রকৃতির ক্ষতি হয় এমন কোন আচরণ করা উচিৎ নয়। যেহেতু জলাশয়ের পরিমান হ্রাস পেয়েছে এবং প্রতিমার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে সেহেতু প্রতিমা বিসর্জনের বিকল্প পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হবে।
যেখানে প্রতিমা স্থাপন করা হয় সেখানেই জল দিয়ে বিসর্জনের কাজ সম্পন্ন করা উচিৎ বা ছোট আকারে প্রতিমা তৈরি করে সেটাকে জলে বিসর্জন দিয়ে বড় প্রতিমাকে যেখানে স্থাপিত সেখানেই জল দিয়ে বিসর্জনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বা বিকল্প আরো ভালো কোন পদ্ধতি খুঁজে নিতে হবে।
প্রয়োজনের সাথে পদ্ধতি বদলে নেওয়ার নামও ধর্ম। অনুপযোগী নিয়ম গুলিকে বাদ দিয়ে উপযোগী নিয়ম গ্রহণ করতে না পারলে ধর্ম পালন করে কোন লাভ হবেনা।শ্রীঅশোক চক্রবর্তী
সনাতন সংগঠন
বাংলাদেশ।
কোন মন্তব্য নেই