পিতা বা পিতৃদেব
ন সত্যং দানমানৌ বা ন যজ্ঞাশ্চাপ্তদক্ষিণাঃ।
তথা বলকরা: সীতে যথা সেবা পিতুর্হিতা৷৷
স্বর্গো ধনং বা ধান্যং বা বিদ্যা: পুত্রা: সুখানি চ ৷
গুরুবৃত্ত্যনুরোধেন ন কিঞ্চিদপি দুর্ল্লভম্ ৷৷
রামায়ণ।
অর্থাৎ, সত্য, দান, মান বা দত্তদক্ষিণ যজ্ঞ সকল পিতৃসেবার ন্যায় শ্রেষ্ঠ ফলদাতা নয়। পিতার সেবা করলে স্বর্গ, ধন, ধান্য, বিদ্যা, পুত্র ও মুখ কিছুই দুর্লভ হয় না।
পিতা-মাতার পূজার দ্বারা মানব অতুল ঐশ্বৰ্য্য লাভ এবং তৃপ্তি লাভ করে। জগতে পিতা সর্বাপেক্ষা পূজনীয়। যার প্রভাবে মানুষেরা এই জগৎ দর্শন করে। তিনি জন্মদান করে বলে জনক, রক্ষা করেন বলে পিতা ও বিস্তার করেন বলে তাত ইত্যাদি নামে আমরা পিতাকে সম্বোধন করে থাকি। যথা-
মান্যঃ পূজ্যশ্চ সর্ব্বেভাঃ সর্ব্বেষাং জনকো ভবেৎ।
অস্থো যস্য প্রসাদেন সর্ব্বান পশ্যতি মানবঃ॥
জনকো জন্মদাতা চ রক্ষণাচ্চ পিতা নৃণাম।
তাতো বিস্তীর্ণকরণাৎ কলয়া সা প্রজাপতিঃ॥
-ব্ৰহ্মবৈবৰ্ত্ত পুরাণ গণপতিখণ্ড
উপাধ্যায়, জ্যেষ্ঠভাই, মহীপতি, মাতুল, শ্বশুর, রক্ষক ও জ্যেষ্ঠ পিতৃব্য; এনারা সকলে পিতৃতুল্য। এঁদের সাথে পিতৃতুল্য ব্যবহার করতে হয়। পিতা মাতা ও আচার্য্য এই তিনজন মহাগুরু।
তন্ত্রসার শাস্ত্র অনুসারে, উৎপাদক পিতা অপেক্ষা মন্ত্রদাতা পিতা অধিক গুরু।
উৎপাদক ব্রহ্মদাত্রোর্গ্রীয়ান ব্রহ্মদঃ পিতা।
তস্মান্মন্যেত সততং পিতুরপাধিকং গুরুম্ ॥
(তন্ত্রসার )
#চাণক্য পাঁচ প্রকার পিতার কথা বলেছেন-
জনয়িতা চোপনেতা চ পঞ্চৈতে পিতরঃ স্মৃতাঃ ॥ (চাণক্য)
অন্নদাতা, ভয়ত্রাতা, শ্বশুর, জনক ও উপনেতা এই পাঁচজন পিতা।
ব্রহ্ম বৈবর্ত্তপুরাণে সাতজন পিতার কথা বলে হয়েছে-
কন্যাদাতান্নদাতা চ জ্ঞানদাতা ভয়প্রদঃ।
জন্মদো মন্ত্রদো জ্যেষ্ঠভ্রাতা চ পিতরঃ স্মৃতা॥
(ব্রহ্মবৈবৰ্ত্তপুরাণ শ্ৰীকৃষ্ণজন্ম খণ্ড ৩৫ অধ্যায়)
কন্যাদাতা, অন্নদাতা, জ্ঞানদাতা, অভয়দাতা, জন্মদাতা, মন্ত্ৰদাতা ও জ্যেষ্ঠভাই এই ৭ জন পিতৃস্থানীয়।
#এছাড়া গরুড়পুরাণে ৩১ প্রকার পিতৃগণ নির্দিষ্ট আছে।
পিতাকে প্রণাম করার মন্ত্র-
পিতাকে প্রণাম করার মন্ত্র-
পিতা স্বর্গঃ পিতা ধর্ম্মঃ পিতাহি পরমন্তপঃ।
পিতরি প্রীতিমাপন্নে প্রীয়ন্তে সর্ব্বদেবতা॥
নমঃ পিতৃ চরণেভ্য নমঃ।
পিতাই স্বর্গ, পিতাই ধর্ম, পিতাই পরম তপস্যা। পিতা সন্তুষ্ট হলে সর্বদেবতাই প্রীত হয়ে থাকেন। সেই পিতার শ্রীচরণে প্রণাম।।
ছবিঃ প্রয়াত পিতৃদেব সুদেব চন্দ্র দাস।
কোন মন্তব্য নেই